করোনাতেও থেমে নেই নারী উদ্যোক্তারা
মহামারি করোনায় স্বাভাবিক জীবনে ছন্দপতন ঘটেছে। অনেকে মহামারী করোনার প্রকোপ পড়ে পেশা পরিবর্তন করেছে। আমাদের দেশে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও রয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোগতা। আর এই করোনায়ও থেমে নেই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্ষুদ্র নারী উদ্যোগতারা। আজকে সেই নারী উদ্যোগতাদের হার না মানার গল্প তুলে ধরছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী খন্দকার নাঈমা আক্তার নুন ।
আমি কাজ করছি হ্যান্ডপেইন্ড ড্রেস, পাঞ্জাবি, শাড়ি, জুয়েলারি নিয়ে। হঠাৎ করে করোনা ভাইরাসে কারণে সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলাম যেমন - কাঁচামাল সংগ্রহ করা, ঠিক সময়ে কাস্টমারদের ডেলিভারি দেওয়া, আবার অর্ডার নেওয়াতে সমস্যা হয়েছিল যে সঠিক সময়ে কাঙ্ক্ষিত পণ্যটি তাদের পৌঁছে দিতে পারব কিনা ইত্যাদি ভেবে হতাশ হয়ে যাচ্ছিলাম। পরবর্তীতে চিন্তা করলাম থেমে থাকলে চলবে না। এই দীর্ঘ সময়টিকে কাজে লাগাতে হবে। তাই আমি বিভিন্ন অনলাইন ট্রেনিং করেছি কিভাবে প্রোডাক্টে নতুনত্ব আনা যায়। আর যখন পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতে শুরু করল কাঁচামাল সংগ্রহ করে কাজে নেমে পড়লাম। আলহামদুলিল্লাহ এই লকডাউনে ভাল সাড়া পেয়েছি । জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিয়েছি, তবুও থেমে থাকি নি। আসলে নারী চাইলে সব পারে। সবশেষে কাস্টমারদের মুখে হাসি ফুটাতে পেরে সব কষ্ট ফিকে হয়ে যায়।
আসমা আক্তার মুক্তা
নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ৩য় বর্ষ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
সত্বাধিকারী - শ্বেতপদ্ম
কলেজ জীবন থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছে ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে এই স্বপ্নের বাস্তবায়ন করার সুযোগ পাই। করোনা ভাইরাসের জন্য সব কিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল এবং এই সময় নিজেকে তৈরি করার জন্য একটা ভার্চুয়াল সেশনে অংশগ্রহণ করি। আর সেখানে অন্যতম গেস্ট হিসেবে ছিলেন ফারহা মাহমুদ তৃণা আপু,ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইনভেস্ট), ই-ক্যাব, ওনার অফ তৃণা'স ক্লোসেট। আপু সেই সেশনে বলেছিলেন,"একজন নারী যদি মন থেকে চায়, তবে সে অবশ্যই তার দক্ষতাকে ইনভেস্ট হিসেবে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হতে পারে।" আপুর এই কথাটা আমাকে খুব ভাবিয়েছিলো। আর এরপর থেকেই আমি নতুন করে ভাবতে শুরু করলাম। একটা পেইজ খুলে ফেললাম,যার নাম "Sadia's Artwork"। আর পেইজ খোলার পরে মূলত আমার কাজ শুরু হয়ে যায়। আমরা সকলেই জানি, করোনা মহামারী গ্রাস করে ফেলেছে পুরো বিশ্বকে। কিন্তু তারপর থেমে থাকেনি জনজীবন। করোনার জন্যই আজ আমরা কম বেশি সবাই অনলাইনমুখী হয়েছি পণ্য ক্রয়ের জন্য। আমি পণ্য সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে ঢাকার ভেতরে হোম ডেলিভারি এবং ঢাকার বাহিরে কুরিয়ারের মাধ্যমে ডেলিভারি দিচ্ছি। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সকল কাজ করা হচ্ছে। পরিশেষে একটা কথাই বলতে চাই-
নারী মানে পিছিয়ে পড়া না বা অল্পতেই ভেঙ্গে পড়া না। বরং সৎ ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে সামনে এগিয়ে যাওয়া। ইনভেস্ট নেই বা সামান্য আছে,কিভাবে বিজনেস করবে? তবে আমি বলব,তোমার যদি দক্ষতা ও ইচ্ছাশক্তি থাকে,তবে অবশ্যই সম্ভব।
সাদিয়া হোসেন মিম
বিবিএ ইন এগ্রিবিজনেস, ১ম বর্ষ
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
সত্বাধিকারি - Sadia's Artwork
পরিবারের কেউ চাচ্ছিলো না যে ব্যবসা করি। তবুও নিজে সাহস করে শুরু করলাম। যেহেতু ক্ষুদ্র উদ্যোগতা তাই সেরকম পরিসরে শুরু করতে পারি নি। আমার বিশ্ববিদ্যালয় ও এর বাইরে অল্প পরিসরে শুরু করেছি পার্লের কাস্টমাইজড জুয়েলারি। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় আমারা অধিকাংশ তরুণ-তরুণী তাদের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখেই মূলত কাজ করার চেষ্টা করছি। করোনার জন্য ব্যবসা একটু ঝিমিয়ে পড়েছিল। ডেলেভারি সংক্রান্ত সমস্যা ছিল। কিন্তু থেমে থাকে নি। আমার ধারণা নারীরা পুরুষের তুলনায় কোন অংশেই কম না। ঘরে বাইরে সব দিকেই সমানতালে কাজ করে যাচ্ছে নারীরা৷ আমি মনে করি আমার মতো আরো অনেক উদ্যোক্তা রয়েছে যারা করোনার কাছে পরাজিত হয় নি। বরং করোনাকে জয় করেছে।
আতিকা ইসলাম সারা
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগ, ২য় বর্ষ
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
সত্বাধিকারী- Vintage Blossom
No comments